Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
অনলাইনে গাভীর কৃত্রিম প্রজনন পদ্ধতি ট্র্যাকিং সিস্টেম
ছবি
ডাউনলোড

নাগরিকসেবায়উদ্ভাবনীপাইলটউদ্যোগেরতথ্য

উদ্ভাবনী পাইলট উদ্যোগের শিরোনাম: Developing

Online Web based Artificial Insemination

Tracking System (অনলাইনে কৃত্রিম প্রজনন সেবা ট্র্যাকিং পদ্ধতি)

ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও মোবাইল এপসের উদ্ভাবন ।

বাস্তবায়নএলাকা:

বাকেরগঞ্জ, বরিশাল ।

বাস্তবায়নকারী:

ডা.পলাশ সরকার, ভেটেরিনারি সার্জন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর, বাকেরগঞ্জ, বরিশাল ।

পাইলটআইডিয়াশুরুরতারিখ :

৩১ মে ২০১৫

সুবিধাভোগীরধরণঃ

ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক গাভীপালনকারী, ডেইরী খামারি ।

সুবিধাভোগীরসংখ্যাঃ

১০০০ জন

আইডিয়াবাস্তবায়নেব্যয়:

১৬,৩০,০০০/= (ষোল লক্ষ ত্রিশ হাজার)

আইডিয়াবাস্তবায়নেউৎস :

Service Innovation Fund (SIF), Access to Information (a2i) Programme - II, Prime Minister’s Office

বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলা ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত । অন্যান্য উপজেলার ন্যায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ বাকেরগঞ্জ, বরিশালের প্রধানতম কার্যক্রম হচ্ছে গবাদি পশু ও পাখির চিকিৎসা সেবা প্রদান, দেশি গাভীর জাত উন্নয়ন তথা কৃত্রিম প্রজনন সেবা প্রদান, গবাদি পশু ও পাখির প্রতিশোধক টিকা প্রদান কর্মসূচী এবং গাভী বা ডেইরি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ, হাসঁ, মুরগি (ব্রয়লার, লেয়ার, সোনালী) পালনকারী খামারীদের পরামর্শ প্রদান । কিন্ত প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা প্রদানের একটি প্রধান সমস্যা হচ্ছে রের্কড কিপিং সিষ্টেম । যা বর্তমানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে অ্যানালগ পদ্ধতি বা রেজিষ্টার পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হচ্ছে । এর ফলে কৃষক বা খামারী তাঁর গবাদি পশু ও পাখির উপরোক্ত সেবা দানের সঠিক তথ্য পাওয়া বেশ কষ্টসাধ্য এবং যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ । কারণ, প্রয়োজনীয় জনবল সংকট, রেজিষ্টার লিপিবদ্ধকরণ ও সংরক্ষণ এবং তথ্যের অপ্রতুলতা ইত্যাদি । কৃত্রিম প্রজনন করানোর পর সাধারণত কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট অথবা উপ-কেন্দ্রের সাথে খামারীর তেমন কোন যোগাযোগ থাকে না। খামারীর কৃত্রিম প্রজনন সম্পর্কে উপযুক্ত জ্ঞান না থাকায় বিভিন্ন ধরণের বিভ্রান্তির স্বীকার হয়। যথাযথভাবে তথ্য সংরক্ষণের অভাবে সঠিক জাত ও এর ধারাবাহিকতা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায় না। খামারীগণ গর্ভ পরীক্ষকরণের সময় সম্পর্কিত হিসাব ও প্রসবের সঠিক তারিখ অনেকক্ষেত্রেই সংরক্ষণ করতে পারে না। ষাঁড় ও তার সিমেনের কর্মক্ষমতা সম্পর্কে কোন ডাটাবেইজ নেই। নিবিড় যোগাযোগ না থাকায় ও সঠিক জ্ঞানের অভাবে খামারীরা উচ্চ মু্ল্যে বেসরকারী প্রজননকারী সংস্থার কাছে চলে যায়।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে ২০১৫—২০১৬ অর্থ বছরে সারা দেশে কৃত্রিম প্রজননের অর্জিত সংখ্যা ৩৪,৫৪,৮২০ । সংকর জাতের বাছুর উৎপাদন সংখ্যা ১১,৮৫,৩০৯। সংকর জাতের বাছুর উৎপাদন হার শতকরা ৩৪ ভাগ । অর্থাৎ প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে দেশে কৃত্রিম প্রজননের ৬৬ ভাগ অর্থাৎ প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ গাভী কৃত্রিম প্রজনন করানোর পরও সংকর জাতের বাছুর উৎপাদন করছে না । গাভী প্রতি প্রজননে  গাভী পালনকারীর যদি ৩০০/- টাকা করে খরচ হয় তাহলে কৃত্রিম প্রজননের জন্য প্রতি বছর ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি টাকা । এতে গাভী পালনকারী খামারীর সময়, খরচ ও ভিজিটি (যাতায়াত) নষ্ট হচ্ছে। সংকরায়নের শতকরা হার সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা না থাকায় সেবা গ্রহীতা বিভ্রান্তির স্বীকার হয়। গর্ভধারনে ব্যর্থ হলে দুইবার ফ্রি প্রজননের বিষয়ে সেবা গ্রহীতার স্বচ্ছ ধারনা না থাকায় ভোগান্তির স্বীকার হয় এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সেবাগ্রহীতারা সরকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলে এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের দিকে ঝুঁকে পড়ে।

আবার বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতি- রেজিষ্টার পদ্ধতি বিদ্যমান থাকায় ২.৫ বছর পরে F১ progeny’র বংশের কুলনামা (pedigree history) সঠিকভাবে সংরক্ষণ না থাকার কারণে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক গাভী পালনকারী এবং ডেইরী খামারী বা দুগ্ধ খামারীরা তাঁহাদের কাংখিত বা প্রত্যাশিত ফলাফল হতে বঞ্চিত হচেছ এবং দিন দিন হতাশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে । তাই, প্রজননকৃত গাভীর তথ্য সংরক্ষণে ডিজিটাল ব্যবস্থা চালু করলে এ অবস্থার উত্তরণ ঘটানো সম্ভব ।   

দেশি জাতের গাভীকে প্রজনন করালে উক্ত গাভী ০৯ মাস বাচ্চা (F1) প্রদান করে থাকে । উক্ত বকনা (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ১.৫ বছর পর গরম হলে বা ডাকে আসলে আবার কৃত্রিম প্রজনন করা হয়ে থাকে । কিন্ত প্রায় ২.৫ বছর পরে উক্ত গাভীর বংশের কুলনামা (pedigree history) না থাকার জন্য নির্দিষ্ট উন্নত সংকর জাতের সৃষ্টি হচ্ছে না । এক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক গাভী পালনকারী এবং ডেইরী খামারী বা দুগ্ধ খামারীরা তাঁহাদের কাংখিত বা প্রত্যাশিত ফলাফল হতে বঞ্চিত হচেছ । উদাহারণস্বরুপ, কোন গাভী বা বকনাকে ফ্রিজিয়ান জাতের সিমেন দ্বারা প্রজনন করালে উহার বাচ্চা (F১ progeny) বকনাকেও ২.৫ বছর পরে অবশ্যই ফ্রিজিয়ান জাতের সিমেন দ্বারা প্রজনন করাতে হবে । যদি অন্য কোন জাত যেমন- শাহীওয়াল, সিন্ধি, ব্রাহামা ইত্যাদি জাতের সিমেন দ্বারা প্রজনন করানো হয় তখন উহার বাচ্চা (F২ progeny) না হবে দেশি না হবে ফ্রিজিয়ান বা সিন্ধি বা ব্রাহামা ।

এটুআই প্রোগ্রামের প্রশিক্ষণ শেষে টিম গঠন করে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায়  ৩১ মে ২০১৫ তারিখে জনাব ডা. পলাশ সরকার পাইলটিং কার্যক্রম শুরু করেন।  কিছু দিন পর আরও সহজে সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে Service Innovation Fund (SIF) এর সহয়তায় Developing Online Web Based Software for Artificial Insemination Tracking System ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ও মোবাইল এপস তৈরির কার্যক্রম হাতে নেয়া হয় ।

  • তথ্য সংরক্ষণে ডিজিটাল ব্যবস্থার প্রবর্তন ।
  • অতি স্বল্প সময়ে গাভীর বংশের কুলনামা (pedigree history) যাচাই করে নির্দিষ্ট জাতের সিমেন দ্বারা প্রজনন করানো ।
  • কৃত্রিম প্রজনন সেবা গ্রহণকারী ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক গাভী পালনকারী এবং ডেইরী খামারী বা দুগ্ধ খামারীরা যেকোন সময়ে যেকোন স্থানে বসে বা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে (ইউডিসি) গিয়ে নিদির্ষ্ট ওয়েবসাইট থেকে কেবল তাহাঁর মোবাইল নম্বর দিয়ে অল্প খরচে তারঁ প্রজননকৃত গাভীর তথ্য বা বংশের কুলনামা (pedigree history) জানতে পারবে।          
  • কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর অধিক সচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে ।
  • সেবা গ্রহিতার ভোগান্তি হ্রাস পাবে ।
  • অতি অল্প সময়ে কৃষকের অধিক উৎপাদনশীল জাতের সৃষ্টি হবে ।
  • কৃষক কৃত্রিম প্রজননে অধিক উৎসাহী হবে এবং আস্থা ফিরে পাবে ।
  • গাভী পালনকারী এবং কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর মধ্যে নিবিড় যোগসূত্র তৈরি হবে ।
  • কৃত্রিম প্রজনন কর্মীর কাজ তদারকি করা সহজ হবে এবং অধিক জনবান্ধব হবে । 
  • প্রকল্প এলাকার সকল প্রজননকৃত গাভীসমূহের Standard Database তৈরী হবে । 

ফলাফলঃ

অতি অল্প সময়ে প্রকল্প এলাকার সকল প্রজননকৃত গাভীর তথ্য সমৃদ্ধ Standard Database তৈরী করে অধিক উৎপাদনশীল সংকর জাতের গাভী সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্প এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠির আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন এবং দুধ ও মাংসের চাহিদা পূরণ এবং গুনগত মানম্পন্ন বাছুর উৎপাদন নিশ্চিত হবে ।

প্রকল্পটি পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন অ্যাওর্য়াড ২০১৬ অর্জন করে।